–রেট কত?
গলির মোড়ে দাড়িয়ে থাকা মেয়েটিকে লক্ষ্য করে জিজ্ঞাসা করলো ছেলেটি।
অন্যমনস্ক ছিলো মেয়েটি। হঠাত্ করে ডাকাতে চমকে উঠলো।
–জ্বী. .! আমারে বলছেন?
–বল্লাম যে.. কত দিলে চলবে?
মেয়েটি মুখে মৃদু হাঁসি নিয়ে প্রতিউত্তর দিল-
–যা ইচ্ছা হয় দিয়েন!
–খদ্দের খুব একটা পাচ্ছো না, তাই না ?
–জ্বী না। আজ কেউ ফিরেও তাকাচ্ছে না!
কথাটি বলার সময় মেয়েটির মুখে একটা মলিন হাঁসি ছিল। কি যেন একটা আছে সেই হাঁসিতে।
এতক্ষনে মেয়েটিকে ভালো করে লক্ষ্য করে ছেলেটি।
সুন্দর,প্রানোচ্ছল দেখতে। কচিঁ লাউ এর ডগার মত মনে হচ্ছে দেখে।
কতই বা বয়স হবে মেয়েটির? ১৬ কি ১৭।
সবে মাত্র জীবনের শুরু ওর।
আর এই বয়সেই
এই রাস্তায় নেমে গেলো..? ණ รเทนร
ভাবতে থাকে ছেলেটি!
মনে মনে কিছু প্রশ্ন আসে তার…
–তোমার বাড়িতে কে কে থাকেন?
–আমার একটা অসুস্থ বাপ। আর কেউ না।
ছেলেটি বুঝতে পারলো এরা নিতান্তই দরিদ্র।
মনে মনে একটা কথাকে আজ খুব তুচ্ছ মনে হচ্ছে. . . .
“কাজী নজরুলের” সেই কথাটি- “হে দারিদ্র তুমি মোরে করেছ মহান”
কোনো মানে হয়না কথাটির।
বাস্তব বড়ই কঠিন!!!
মেয়েটির দিকে আবারও তাকালো ছেলেটি।
দেখতে দেখতে নিজের ছোট বোনটির কথা মনে পড়ে গেলো তার।
সৃষ্টিকর্তা চাইলে কি না পারেন?
এই মেয়েটির স্থানে আজ তার বোন ও তো হতে পারতো..!
এদেরকে দেখার জন্য সমাজের কেউ এগিয়ে আসবে না। কেউ না!!
নিজেকে নিজের কাছে খুব অসহায় লাগলো ছেলেটির! আবার অবাকও হলো এই ভেবে যে- এত দুঃখের মাঝে থেকেও এরা গাল প্রসারিত করে হাঁসতে জানে কিভাবে?
–আচ্ছা আমাকে ভালো দেখে তিন মুটি দাও।
– জ্বে. .আইচ্ছা।
বলতে বলতেই নিপুন হাতে তিন মুটি লাল শাঁক একসাথে বেধেঁ ফেলে মেয়েটি। তার ঐ কচিঁ হাতের,বেশিক্ষন সময় লাগলো না কাজটি করতে।
শাঁকের মুটি হাতে নিয়ে, পকেট থেকে একটা ১০০ টাকার নোট বের করে মেয়েটির হাতে দিয়ে হাটা শুরু করল ছেলেটি।
–ও ভাইজান. . . বাকি টাকাটা নিলেন না?
ছেলেটি মুখে একটা মৃদু হাঁসি দিয়ে বলে উঠলো
–রেখে দাও. . . লাগবে না।
মেয়েটি চোখে কৃতজ্ঞতার চাহনি নিয়ে আগের বারের থেকে একটু বড় করে একটা হাঁসি দিলো। এ হাঁসি আনন্দের হাঁসি। এ হাঁসি কৃতজ্ঞতার হাঁসি।
রাস্তায় মানুষের ভিড়। কিন্তু কেউ দেখতে পেলো না,এই দুই প্রাণির অনুভুতির আদান প্রদানের ঘটনাটি!
হয়তো এভাবেই কত অজানা অনুভূতির টেলিপ্যাথি হয়ে যাচ্ছে পৃথিবী জুড়ে।
সে খবরই বা কে রাখে??
ණ รเทนร